▌"ভারত উপমহাদেশে কোন আলিম নেই" --- এমন দাবির সত্যতা কতটুকু?
.
❛❛কিছু লোক বলে থাকে যে ভারত (উপমহাদেশে) কোন আলিমই নেই। এখন তারা নিজেদের আশেপাশের গুটিকয়েক আলিমদের থেকে ইলম নেয় বা অনলাইনের মাধ্যমে বাইরের দেশের লোকদের থেকে ইলম নেয়। স্থান বদলের সাথে সাথে কি আলিম হারিয়ে যায়? এটা মূর্খতা ও অজ্ঞতার রাস্তা, এসব খাওয়ারিজদের চিন্তাভাবনা (নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক)। কত বড়ো বড়ো আলিম রয়েছেন এখানে, যেমন শাইখ আনিস (হাফিযাহুল্লাহ), যিনি কিনা শাইখ আব্দুল মুহসীন আল-আব্বাদ (হাফিযাহুল্লাহ)-র খুব কাছের ছাত্র। শাইখ আনিসুর রহমান আল-আযমী (হাফিযাহুল্লাহ) দু' দুটো কলেজ থেকে বি-এ করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ বড়ো বড়ো উলামা রয়েছেন। শাইখ শফিউর রহমান মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ), যিনি কিনা সিরাতের জন্য পুরষ্কারপ্রাপ্ত। যেটির লাখো কপি আরবী ও অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে ও যেটি সিরাতের জন্য সবচাইতে উত্তম গ্রন্থ মানা হয়।
.
আমাদের তরুণেরা ভ্রষ্টতার পথে চলে যাচ্ছে --- কেন? কারণ আমাদেরকে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে হবে , যে কোন উলামা ভুলের উর্ধ্বে নয়, নিস্পাপও নয়। দুটো রাস্তা রয়েছে। একটি হলো তারা মনে করে তাদের ইমামরা কিভাবে ভুল করতে পারে? তারা মাসুম। তাদের শতভাগ কথাকে সহীহ বলে মনে করে, যা বাড়াবাড়ি কোন সন্দেহ নেই। আরেক রাস্তা হলো, যারা উলামাদের কিছুই মনে করেনা। উলামারা পুরোপুরি ভুল। তাদের থেকে দ্বীন শিখারই দরকার নেই। এটা হলো তাফরীদ্ব, জুলুম। এই দুইপ্রকার লোকই গুনাহগার। আর মধ্যমপন্থা কি? মধ্যমপন্থা হল আমরা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জাম'আত উলামাদের সম্মান করি। কারণ ক্বুরআনে উলামাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। উলামাদের জিজ্ঞেস করো, তাদের প্রতি ঝুঁকো। মহান আল্লাহ বলেন,
يَرْفَعِ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمْ وَٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْعِلْمَ دَرَجَٰتٍ
"তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন।" --- [১]।
এবং তিনি অন্যত্র বলেন,
هَلْ يَسْتَوِى ٱلَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَٱلَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ
"যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে?" --- [২]।
ক্বুরআনে তাদের (উলামাদের) প্রতি সম্মান প্রদর্শিত হয়েছে।
شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ وَأُو۟لُوا۟ ٱلْعِلْمِ قَآئِمَۢا بِٱلْقِسْطِ
আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই। ফেরেশতাগণ এবং ন্যায়নিষ্ঠ আলিমগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন। --- [৩]।
.
আল্লাহ্ তা'আলা সাক্ষ্য দিচ্ছেন দুনিয়ার সবচাইতে বড় সত্যের অর্থাৎ তাওহীদের। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, আল্লাহ্ সাক্ষী দিচ্ছেন যে আল্লাহ্ ছাড়া যোগ্য উপাস্য কেউ নেই, ফেরেশতা সাক্ষী দেয় ঐ একই সত্যের ও ইলমওয়ালা অর্থাৎ উলামারা একই সাক্ষী দেয়। আল্লাহ্ নিজ ও ফেরেশতাদের সাথে উলামাদের কথা বললেন।
তাই দুই চরমপন্থার মাঝামাঝি রাস্তা হলো, আমরা উলামাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করি। উলামাদের থেকে আমরা ইলম নিবো। কিন্তু যদি কোন স্থানে ভুল স্পষ্ট হয়ে পড়ে, তবে ঐ ভুলটুকু আমরা নিই না৷ আর যেটুকু হক্ব, সেটুকু নিই। এটাই আমাদের নিয়ম। তো, এখনকার এই ফিতনার কথা যা আমি বলছি, তার কারণে লোকেরা উলামাদের থেকে দূরে সরে পড়ছে। কোন আলিমের একটি ভুল হয়েছে? খতম! পুরো ইলম নেয়াই খতম! সে তো আলিম, মানুষ! ভুলের জন্য পুরোপুরি বাদ দিয়ে দিবো --- এটা কোন যুক্তি হলো?❞
.
--- শাইখ ড.আর.কে নূর মুহাম্মদ উমরী (রাহিমাহুল্লাহ)।
.
⦁ তথ্যসূত্র:
.
১. --- [সূরাহ আল-মুযাদিলাহ্, আয়াত: ১১]।
২. --- [সূরাহ আয যুমার, আয়াত: ৯]।
৩. --- [সূরা আল ইমরন, আয়াত: ১৮]।
.
⦁ গৃহীত:
.
--- অনুবাদক: আখতার বিন আমীর। ▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬